১৯৭১ সালের ১৩ জুন, সকাল ১০টা। সৈয়দপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল যে ট্রেন, সেটা দেখে বোঝার কোনো উপায় ছিল না- একটু পরে সেটি বীভৎস এক হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী হতে চলেছে। (১/n)
অন্তত মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী শ্যামলাল আগরওয়ালা ঘুণাক্ষরেও কিছু আঁচ করতে পারেননি বরং বেশ কয়েক দিন ধরে অবরুদ্ধ বিহারি-অধ্যুষিত এই শহর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আশায় ছিল তাঁর মন।সৈয়দপুর শহরে,পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষ থেকে মাইকে বলা হচ্ছিল-*(২/n)
*"শহরে যেসব হিন্দু মাড়োয়ারি আটকা পড়ে আছেন, তাঁদের নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেওয়া হবে। এ জন্য একটা বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রেনটি সৈয়দপুর রেলস্টেশন থেকে ভারতের শিলিগুড়ির উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।"
(৩/n)
(৩/n)
৪৬ বছর পর শ্যামলাল আগরওয়ালার বর্ণনা মতে, মাইকে ঘোষণা শুনে যুদ্ধে লুটতরাজের হাত থেকে তখনও যা কিছু সম্বল বেঁচে গিয়েছিল, তা-ই গোছাতে শুরু করে দেন মাড়োয়ারিরা। ১৩ জুন সকালে তাঁরা সমবেত হতে থাকেন সৈয়দপুর রেলস্টেশনে। (৪/n)
প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো বিশেষ ট্রেনে, গাদাগাদি করে উঠে বসলেন সবাই।
হত্যাযজ্ঞের প্রত্যক্ষদর্শী তপন কুমার দাস বর্ণনা মতে,ঠিক সকাল ১০টার দিকে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।চলছিল ধীরে ধীরে।শহর থেকে বেরিয়ে রেলওয়ে কারখানা পেরিয়েই হঠাৎ থেমে যায় ট্রেন।(৫/n)
হত্যাযজ্ঞের প্রত্যক্ষদর্শী তপন কুমার দাস বর্ণনা মতে,ঠিক সকাল ১০টার দিকে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।চলছিল ধীরে ধীরে।শহর থেকে বেরিয়ে রেলওয়ে কারখানা পেরিয়েই হঠাৎ থেমে যায় ট্রেন।(৫/n)
জায়গাটা স্টেশন থেকে দুই মাইল দূরে।নাম গোলাহাট।ট্রেন থামার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেন তপন।বন্ধ জানালা একটু ফাঁক করতেই তাঁর অন্তরাত্মা কেঁপে যায়।বাইরে সারি সারি পাকিস্তানি হানাদার সেনা।সঙ্গে তাঁদের দোসর বিহারিরা।সেনা সদস্যদের হাতে রাইফেলরিদের হাতে চকচক করছিল ধারালো রামদা।(৬/n)
অরেক প্রত্যক্ষদর্শী গোবিন্দলাল দাসের বর্ণনা মত "থেমে থাকা ট্রেনের কামরায় ঢুকেই পাকিস্তানিরা উর্দুতে চিৎকার করে বলে এক এক করে সবাই নেমে এসো তোমাদের মারতে এসেছি আমরা তবে পাকিস্তানির দামি গুলি তোমাদের মেরে খরচ করবো না। তোমাদের সবাইকে বলি দেওয়া হবে।"(৭/n)
সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় নির্মম হত্যালীলা। রমদা দিয়ে কেটে ফেলা হতে থাকে সবার গলা। শিশু মহিলা অার বৃদ্ধরাও রেহায় পায়নি।বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায় যে ৪৪৮ জন কে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। (৮/n)
কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন "ট্রেন" উপন্যাসে সৈয়দপুরের গোলাহাট বধ্যভুমি ও ট্রেন ট্রাজেডি র নির্মম বর্ননা তুলে ধরেন।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:বিশিষ্ট সাংবাদিক এম্ আর আলম ঝন্টু ভাই এর লেখা থেকে তথ্যটি নেওয়া হয়েছে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:বিশিষ্ট সাংবাদিক এম্ আর আলম ঝন্টু ভাই এর লেখা থেকে তথ্যটি নেওয়া হয়েছে।